চীনে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের
গত সেপ্টেম্বর থেকে চীনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে, সশরীরে ক্লাসও চললেও শীতকালীন অবকাশ ও করোনা মহামারীর কারণে দেশে আসা প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর চীন ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে আটকে আছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যে চীন সরকার দেশে প্রবেশের শর্ত হিসেবে তাদের উৎপাদিত টিকার কথা উল্লেখ করেছে। এপর্যন্ত চীন সরকার দুই ধাপে উপহার হিসেবে টিকা পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার চীনা টিকার অনুমোদনও দিয়েছে। এই টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় গড়ে প্রায় ৬ হাজারের মতো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনে পড়তে গেছেন। চীনের ব্যুরো অব স্ট্যাটেস্টিক্সের সর্বশেষ রিপোর্টমতে, ২০২০ সালে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৬১ বিদেশি শিক্ষার্থী চীনে পড়াশোনায় ছিলেন। তার আগের ৩ বছরে গড়ে এ সংখ্যা ছিল দ্বিগুণের বেশি। এর মধ্যে ২০১৭ সালে চীন ছিল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বিদেশি শিক্ষার্থী গ্রহণকারী রাষ্ট্র। সেই বছর দেশটিতে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭৭৩ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেছেন।
জানা যায়, নভেম্বর থেকে চীনে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। চীনে পড়াশোনার আপডেট সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় ওয়েবসাইট ‘এডমিশন চায়না’র তথ্যমতে, চীনের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশটিতে ফেরার অনুমোদন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন নতুন অনলাইন প্রোগ্রাম চালু করছে। এটা বিভিন্ন দেশে আটকাপড়া শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু সরাসরি শারীরিক উপস্থিতিতে ক্লাসের বিকল্প যে অনলাইন ক্লাস বা নতুন নতুন প্রোগ্রাম হতে পারে না, তা মানছেন তারা। বিশেষ করে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের সঙ্গে এটি পুরোপুরি বেমানান। বাংলাদেশে আটকেপড়া শিক্ষার্থীরা উভয় দেশের সরকারের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তারা ৩ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও শিক্ষাজীবন বাঁচাতে দ্রুত চীনে ফিরতে চাওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে চীন সরকারের ও ঢাকাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করছে।
চীনে পড়াশোনা করেন, এমন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা গতকাল মানববন্ধন করে তাদের টিকার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। মানববন্ধনে চীনে পড়ুয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসার দাবি করা হয়। এ ছাড়া চীনে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের সাত মাস ধরে বন্ধ থাকা ভিসা পুনরায় চালু করার দাবি করা হয়। এর পাশাপাশি চীনা দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সেমিস্টারের মধ্যেই ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- সারিমা ঋতু, মোহাম্মদ ওয়ালিদ প্রমুখ।